Tax VAT Business Consultants

আয়কর রিটার্ন (Tax Return) হলো একটি আনুষ্ঠানিক বিবরণী, যেখানে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার নির্দিষ্ট অর্থবছরের আয়, ব্যয়, সম্পদ, দায়, বিনিয়োগ, কর ছাড় এবং পরিশোধিত করের বিস্তারিত হিসাব সরকারকে জানায়। এটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) নিকট আইনগতভাবে দাখিলযোগ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি, যার মাধ্যমে সরকার নির্ধারণ করে করদাতার প্রকৃত করযোগ্য আয় এবং তার উপর ভিত্তি করে কর নির্ধারণ করে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৬ষ্ঠ তফসিল অনুসারে নির্ধারিত বার্ষিক আয়ের সীমা অতিক্রম করলেই রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক (উদাহরণ: পুরুষের ক্ষেত্রে BDT ৩,৫০,০০০ এবং নারীদের জন্য BDT ৪,০০,০০০)।

তবে অনেকক্ষেত্রে টিআইএন (TIN) থাকলেই রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক, আয় সীমার নিচে থাকলেও। রিটার্ন দাখিলের সময় করদাতাকে জমা দিতে হয়: আয় বিবরণী, ব্যয়ের প্রমাণপত্র, কর ছাড়ের কাগজ, ব্যাংক বিবরণী, দান ও বিনিয়োগের তথ্য, সম্পদ বিবরণী (Statement of Assets & Liabilities), এবং পরিশোধিত করের চালান বা রশিদ। এটি সাধারণত জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত দাখিল করা যায় (নির্দিষ্ট তারিখ NBR নির্ধারণ করে)।

রিটার্ন দাখিলের পর পাওয়া যায় একটি Acknowledgement Receipt, যা অনেক সরকারি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জরুরি দলিল হিসেবে বিবেচিত হয় (যেমন: পাসপোর্ট, ঋণ, ট্রেড লাইসেন্স)। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দেওয়া হয়, তাহলে অর্থদণ্ড, বিলম্ব সূচক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। বর্তমানে রিটার্ন দাখিলের কাজটি করা যায় অনলাইনেও—www.etaxnbr.gov.bd অথবা www.nbr.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে সহজেই e-return সাবমিট করা যায়। সবমিলিয়ে, আয়কর রিটার্ন দাখিল শুধু আইনি বাধ্যবাধকতাই নয়, এটি একটি সচেতন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রে দায়িত্ব পালনের অংশ। নিয়মিত কর দাখিল করলেই আপনি পাবেন কর কার্ড, নানা সরকারি সেবা এবং সম্মানজনক করদাতার স্বীকৃতি।

 

Leave A Comment

All fields marked with an asterisk (*) are required