বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে রাজস্ব প্রশাসনকে আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) ভ্যাট ও ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের জন্য ই-রিটার্ন (e-Return) বা অনলাইন রিটার্ন দাখিল ব্যবস্থা চালু করেছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে করদাতারা ঘরে বসেই অনলাইনে তাঁদের ভ্যাট বা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন, যা আগের ম্যানুয়াল পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি সময় সাশ্রয়ী, সহজ ও স্বচ্ছ।
ই-রিটার্ন ব্যবস্থার প্রধান সুবিধা হলো: করদাতাকে আর সংশ্লিষ্ট ট্যাক্স অফিসে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় না বা অফিসে বারবার যেতে হয় না। ইন্টারনেট সংযোগ ও একটি কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইস থাকলেই যে কেউ নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে (যেমন: https://etaxnbr.gov.bd বা https://vat.gov.bd) প্রবেশ করে খুব সহজে রিটার্ন দাখিল করতে পারে। এতে করে করদাতা নিজে কিংবা কর পরামর্শদাতার (Tax Consultant) মাধ্যমে রিটার্ন ফর্ম পূরণ করে অনলাইনে জমা দিতে পারেন এবং প্রাপ্ত রসিদ (Acknowledgement) নিজেই ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারেন।
আরেকটি বড় সুবিধা হলো—ই-রিটার্নে সব তথ্য ডিজিটালভাবে সংরক্ষিত থাকে, ফলে ভবিষ্যতে রিটার্ন সংশোধন, পুরনো রিটার্ন দেখার প্রয়োজন হলে বা অডিট হলে সহজেই প্রমাণ দেখানো যায়। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, ই-রিটার্নের মাধ্যমে মাসিক ভ্যাট রিটার্ন (যেমন: Mushak-9.1) দাখিল করা যায়, এবং অনলাইনেই ই-পেমেন্ট (e-Payment) এর মাধ্যমে ভ্যাট পরিশোধ সম্ভব।
ই-রিটার্ন ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ট (SMS/Email Reminder) এর মাধ্যমে সময় মতো রিটার্ন দাখিলের জন্য সতর্কবার্তা পাওয়া যায়। একইসাথে, সফটওয়্যারটি ডাটা ভ্যালিডেশন করে ফর্মে ভুল থাকলে আগে থেকেই জানিয়ে দেয়—ফলে ভুলের আশঙ্কা কমে এবং জরিমানা এড়ানো যায়। করদাতাদের সহায়তার জন্য হেল্পডেস্ক, অনলাইন টিউটোরিয়াল ও ভিডিও গাইডলাইনও রয়েছে।
সার্বিকভাবে, ই-রিটার্ন ব্যবস্থার ফলে করদাতাদের মধ্যে স্বেচ্ছায় কর প্রদানের আগ্রহ বাড়ছে, আর রাজস্ব বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
